Low Invest Start Planet Business: অল্প টাকায় শুরু করুন গাছের চারা ব্যবসা আর মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করুন খুব সহজেই।

 বর্তমান সময়ে যখন প্রত্যেকে নিজস্ব ব্যবসার কথা ভাবছেন, তখন কম খরচে এবং স্বল্প ঝুঁকিতে আয়ের পথ খুঁজে বের করা অনেক জরুরি। এরকম একটি সুযোগ হলো গাছের চারা ব্যবসা। এই ব্যবসা শুধু আয়ের পথই খুলে দেয় না, বরং পরিবেশকে সবুজ রাখতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। অল্প মূলধন দিয়ে শুরু করে নিয়মিত পরিশ্রম করলে মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করা একেবারেই সম্ভব। এবার চলুন ধাপে ধাপে জানি কীভাবে এই ব্যবসা শুরু করবেন এবং সফল হবেন।

১. শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি

গাছের চারা ব্যবসা শুরু করতে খুব বেশি মূলধনের দরকার হয় না। প্রথমে একটি ছোট জমি বা খালি জায়গা হলেই চলে। অনেক সময় বাড়ির উঠোন বা গ্রামের ফাঁকা জায়গাতেই এই কাজ করা সম্ভব। প্রয়োজন শুধু বীজ, পলিথিন ব্যাগ, মাটি, সার এবং জল

  • মাটি ও গোবরসার মিশিয়ে পলিথিন ব্যাগে ভর্তি করতে হবে।
  • এরপর নির্দিষ্ট মৌসুম অনুযায়ী বীজ বপন করতে হবে। যেমন: গ্রীষ্মকালে আম, কাঁঠাল, লিচুর চারা, আবার শীতকালে ফুল ও শাকসবজির চারা বেশি বিক্রি হয়।
  • নিয়মিত জল দেওয়া এবং আগাছা পরিষ্কার করলেই অল্প সময়ের মধ্যেই সুন্দর চারা তৈরি হবে।

এই প্রাথমিক প্রস্তুতির খরচ খুবই কম, অথচ ভবিষ্যতে এগুলোই আয়ের বড় উৎস হয়ে উঠবে।

২. কোন কোন চারা বেশি চাহিদাসম্পন্ন

একটি ব্যবসা টিকে থাকার জন্য বাজার চাহিদা বোঝা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গাছের চারা ব্যবসায়ও এর ব্যতিক্রম নয়।

  • ফলজ চারা: আম, লিচু, কাঁঠাল, আমড়া, পেয়ারা ইত্যাদি।
  • ফুলের চারা: গোলাপ, গাঁদা, জবা, চন্দ্রমল্লিকা – বিশেষ করে শীতকালে ফুলের চারা বেশি বিক্রি হয়।
  • শাকসবজির চারা: টমেটো, বেগুন, মরিচ, ধনেপাতা – এগুলোর চাহিদা সারা বছর থাকে।
  • বনজ চারা: সেগুন, আকাশমণি, ইউক্যালিপটাস – গ্রামে ও রাস্তার ধারে রোপণের জন্য এগুলো বেশ লাভজনক।

এই চারাগুলোর চাহিদা সারা বছর থাকায় বিক্রি বন্ধ হয় না। এক মৌসুমের চারা বিক্রি শেষ হলে আবার নতুন মৌসুমের চারা তৈরি করা যায়।

৩. বিক্রির সহজ উপায় ও আয় হিসাব

চারা বিক্রি করার জন্য খুব বড় দোকান বা বাজারের প্রয়োজন হয় না। গ্রামগঞ্জে সাপ্তাহিক হাটে, শহরের নার্সারিতে, কিংবা সরাসরি কৃষকের কাছে বিক্রি করা যায়। এখন অনেকেই অনলাইন বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে চারা বিক্রি শুরু করেছেন। ফেসবুক পেজ বা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বানিয়ে প্রচার করলে খুব সহজেই ক্রেতা পাওয়া যায়।

আয়ের হিসাব ধরলে –

  • একটি চারা তৈরি করতে গড়ে খরচ হয় ২ থেকে ৩ টাকা
  • কিন্তু বাজারে সেই চারাগুলো বিক্রি হয় ১৫ থেকে ৩০ টাকা দামে।
  • যদি মাসে ২০০০–৩০০০ চারা বিক্রি করা যায়, তবে খুব সহজেই ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম সম্ভব।

এছাড়াও বড় অর্ডার এলে একসঙ্গে বেশি চারা বিক্রি করে অতিরিক্ত আয় করা যায়।

৪. ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও টেকসই ব্যবসা

গাছের চারা ব্যবসা শুধু আয়ের উৎস নয়, বরং এটি সমাজ ও পরিবেশের জন্যও উপকারী। বর্তমানে সরকারও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালাচ্ছে। তাই অনেক সময় সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা প্রচুর চারা কিনে থাকে। আপনার ব্যবসা একবার জমে গেলে বড় পরিসরে চারা সাপ্লাই দেওয়ার সুযোগও আসবে।

এছাড়াও, নিজের ব্যবসাকে আরও এগিয়ে নিতে চাইলে নার্সারি রেজিস্ট্রেশন করিয়ে নিতে পারেন। এতে সরকারিভাবে স্বীকৃতি পাওয়া যায় এবং বড় কন্ট্রাক্টের সুযোগ তৈরি হয়। একই সঙ্গে মানুষও আপনার ব্যবসাকে বেশি ভরসা করবে।

গাছের চারা ব্যবসা এমন একটি উদ্যোগ যেখানে খুব কম মূলধন দিয়ে শুরু করেও নিয়মিত পরিশ্রমে মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা উপার্জন সম্ভব। এই ব্যবসার জন্য প্রয়োজন শুধু কিছুটা সময়, যত্ন আর ধৈর্য। চাহিদা সর্বদাই থাকবে, কারণ মানুষ ফল, ফুল ও সবজির চাহিদা কখনও ছেড়ে দিতে পারে না। তাই যারা নিজের ছোট ব্যবসা শুরু করতে চান বা বাড়তি আয় খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি একটি চমৎকার সুযোগ।

নবীনতর পূর্বতন

Featured Video