Desi Murgi Farm 2025: দেশি মুরগির ডিম বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করুন গ্রামে বসেই খুব সহজেই - কিভাবে শুরু করবেন জানুন বিস্তারিতভাবে।

 

 আজকের দিনে গ্রাম হোক বা শহর, সবাই স্বাস্থ্য সচেতন। বাজারে পাওয়া পোল্টি মুরগির ডিমের পাশাপাশি দেশি মুরগির ডিমের চাহিদা দিন দিন আকাশচুম্বী হচ্ছে। অনেকেই বলেন, দেশি ডিমে বেশি প্রোটিন, বেশি স্বাদ এবং শরীরের জন্য উপকারী উপাদান থাকে। এজন্য শহরের মানুষ এখন বেশি দাম দিয়ে হলেও দেশি ডিম কিনতে রাজি।

এই চাহিদাকে সামনে রেখে গ্রামের মানুষ চাইলে খুব সহজেই দেশি মুরগির ডিম বিক্রির ব্যবসা শুরু করে প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারেন।

কেন দেশি মুরগির ডিমের ব্যবসা করবেন?

  1. বাজারে চাহিদা বেশি: শহরে দেশি ডিমের দাম সাধারণ ডিমের চেয়ে দ্বিগুণ বা তিনগুণ।
  2. কম বিনিয়োগে শুরু সম্ভব: বড় ফার্ম লাগবে না, ছোট জায়গায় দেশি মুরগি পালন করা যায়।
  3. স্বাস্থ্য সচেতনতা: মানুষ এখন ভেজালমুক্ত ও অর্গানিক খাবারের দিকে ঝুঁকছে।
  4. গ্রামে সহজলভ্য: গ্রামীণ এলাকায় দেশি মুরগি পালা সহজ এবং খাবারের খরচও কম।
  5. ডিমের পাশাপাশি মুরগিও বিক্রি করা যায়: শুধু ডিম নয়, মাংস হিসেবেও দেশি মুরগির ব্যাপক চাহিদা।

ব্যবসা শুরু করতে কী কী লাগবে?

  1. মুরগি কেনা:

    • প্রথমে ৫০–১০০টি দেশি মুরগি দিয়ে শুরু করা যায়।
    • দাম পড়বে প্রতিটি দেশি মুরগির জন্য আনুমানিক ২০০–৩০০ টাকা।
  2. জায়গা:

    • গ্রামে নিজের আঙিনা বা খালি জায়গা থাকলেই হবে।
    • প্রতি ১০টি মুরগির জন্য প্রায় ৩০–৪০ বর্গফুট জায়গা দরকার।
  3. খাবার:

    • দেশি মুরগি সাধারণত ভাত, ধান, ভুট্টা, গম, পোকামাকড় ইত্যাদি খেয়ে থাকে।
    • ফলে খাবারের খরচ তুলনামূলক কম হয়।
  4. ঘর বা শেড বানানো:

    • বাঁশ, টিন, খড় ইত্যাদি দিয়ে সাধারণ শেড বানানো যায়।
    • শীতে গরম ও বর্ষায় শুকনো রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

কত ডিম পাওয়া যায়?

একটি দেশি মুরগি বছরে গড়ে ১৫০–১৮০টি ডিম দেয়।
অর্থাৎ, যদি আপনার কাছে ১০০টি দেশি মুরগি থাকে, তবে বছরে আপনি পেতে পারেন ১৫,০০০ থেকে ১৮,০০০টি দেশি ডিম।

বাজারে দাম

  • বর্তমানে গ্রামে দেশি ডিমের দাম প্রায় ১০–১২ টাকা করে।
  • শহরে ও সুপার শপে এই ডিম ১৫–২০ টাকায় বিক্রি হয়।

ধরুন, আপনি বছরে ১৫,০০০ ডিম উৎপাদন করলেন। যদি প্রতি ডিম ১২ টাকা দরে বিক্রি করেন, তবে মোট আয় হবে ১,৮০,০০০ টাকা।
খরচ বাদ দিলেও (খাবার, ওষুধ, শ্রম ইত্যাদি) আপনার হাতে থাকবে লাখ টাকা পর্যন্ত লাভ।

অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ

  1. বাচ্চা মুরগি বিক্রি: দেশি মুরগি নিজেরাই ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটায়। সেগুলো আলাদা করে বিক্রি করা যায়।
  2. দেশি মুরগির মাংস: বাজারে দেশি মুরগির কেজি ৫০০–৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
  3. অর্গানিক ব্র্যান্ডিং: আপনি চাইলে নিজের ডিমকে "অর্গানিক" বা "গ্রামবাংলার দেশি ডিম" ব্র্যান্ড করে আরও বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন।

ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কিছু টিপস

  • নিয়মিত মুরগিকে পরিষ্কার পানি ও স্বাস্থ্যকর খাবার দিন।
  • সময়মতো টিকা দিতে ভুলবেন না।
  • মুরগির ঘর পরিষ্কার রাখুন যাতে রোগ না ছড়ায়।
  • বাজারের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করুন – স্থানীয় বাজার, শহরের দোকান, অনলাইন ফুড ডেলিভারি অ্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করুন।
  • ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে নিজের ডিম প্রচার করতে পারেন।

সফলতার গল্প

অনেকেই ইতিমধ্যেই গ্রামে বসে দেশি মুরগির ডিম বিক্রি করে ভালো আয় করছেন। কেউ কেউ প্রথমে ২০–৩০টি মুরগি দিয়ে শুরু করে এখন ৫০০–১০০০ দেশি মুরগি পালন করছেন। তাদের মাসে ৫০,০০০ টাকার বেশি ইনকাম হচ্ছে।

দেশি মুরগির ডিম বিক্রি করা শুধু একটা ব্যবসা নয়, এটা গ্রামীণ মানুষের জন্য একটা বাস্তবসম্মত কর্মসংস্থানের পথ। কম খরচে শুরু করে ধীরে ধীরে বড় করা যায়। স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ার কারণে আগামী দিনে এই ব্যবসার চাহিদা আরও বাড়বে।

তাই আপনি যদি সত্যিই গ্রামে থেকে একটি লাভজনক ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে দেশি মুরগির ডিম বিক্রি ব্যবসা হতে পারে আপনার জন্য সেরা পছন্দ।

নবীনতর পূর্বতন

Featured Video